Adds

সাহু সিজদা কাকে বলে - নামাজে ভুল হলে করণীয় কি?

সাহু সিজদা: ভুল সংশোধনের পদ্ধতি


সাহু সিজদা হলো সালাতে ভুল সংশোধনের একটি পদ্ধতি। ফরজ বা নফল যেকোনো সালাতে যদি কোনো ওয়াজিব অংশ ভুলবশত ত্যাগ করা হয়, তাহলে সে ভুলের জন্য এবং শয়তানের প্ররোচনার বিরুদ্ধে সিজদা করতে হয়। এটি সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ শেষ করার পর অথবা সালাম ফিরানোর আগে করা যায়। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, সালাতে ওয়াজিব তরক হলে ‘সিজদায়ে সাহু’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হলে এটি সুন্নাত হবে।

সাহু সিজদা কাকে বলে - নামাজে ভুল হলে করণীয় কি?  | BongoCyber
সাহু সিজদা কাকে বলে - নামাজে ভুল হলে করণীয় কি?  | BongoCyber 


রাসূল ﷺ বলেছেন, যখন একজন মুসল্লি সালাত আদায় করতে দাঁড়ান, তখন শয়তান তাকে সন্দেহের মধ্যে ফেলতে আসে। এতে তিনি কত রাকআত আদায় করছেন, তা ভুলে যেতে পারেন। তাই, এ অবস্থায় মুসল্লিকে শেষ বৈঠকে বসে দুইটি সিজদা করতে বলা হয়েছে।


সাহু সিজদা দেওয়ার কারণ


সালাতে সাধারণত সাহু সিজদা চারটি কারণে দেওয়া হয়:

1. সালাত পূর্ণ হওয়ার আগে সালাম ফিরালে।

2. সালাতের সংখ্যা কম বা বেশি হলে।

3. তাশাহ্হুদ ছুটে গেলে।

4. সালাতে সন্দেহ হলে।


সাহু সিজদা দেওয়ার নিয়ম


1. ইমামের ভুল: যদি ইমাম সালাতরত অবস্থায় নিজের ভুল সম্পর্কে নিশ্চিত হন, তাহলে তিনি শেষ বৈঠকের তাশাহ্হুদ ও দোয়া শেষে তাকবীর দিয়ে দু’টি সিজদা করবেন এবং সালাম ফিরাবেন।


2. রাক‘আত বেশি পড়া: যদি ইমাম ভুল করে অতিরিক্ত রাক‘আত পড়েন এবং পরে ভুল ধরা পড়ে, তখন তাকবীর দিয়ে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফিরাবেন।


3. রাক‘আত কম পড়া: যদি ভুল করে রাক‘আত কম পড়েন, তখন তাকবীর দিয়ে দাঁড়িয়ে বাকি সালাত আদায় করবেন এবং সিজদায়ে সাহু দিয়ে পুনরায় সালাম ফিরাবেন।


4. বসা ভুলে দাঁড়িয়ে যাওয়া: যদি কেউ চার রাক‘আতের সালাতে দুই রাকআত পড়ে তাশাহ্হুদে না বসে ভুলে দাঁড়িয়ে যান, তাহলে শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানোর আগে বা পরে দু’টি সাহু সিজদা করবেন।


সুতরাং, সালাতে ভুলবশত কম বা বেশি হলেও, শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানোর আগে বা পরে দু’টি সিজদা দিতে হবে। ‘সিজদায়ে সাহু’ সালামের পূর্বে ও পরে দু’ভাবেই জায়েয।


সাহু সিজদার কিছু মূলনীতি


ইমামের ভুল: ইমাম সাহু সিজদা করলে মুক্তাদীগণ যদি ভুল না করেও, তাদেরও ইমামের সঙ্গে সিজদা করতে হবে।


সিজদা দিতে ভুলে যাওয়া: যদি কেউ সিজদা দিতে ভুলে যায় তবে পরে স্মরণ হলে সাহু সিজদা দিতে হবে। যদি দীর্ঘ সময় বিলম্ব হয়, তবে তার নামায শুদ্ধ হবে এবং সিজদার প্রয়োজন হবে না।


ইচ্ছাকৃতভাবে সিজদা ছেড়ে দেওয়া: যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সিজদা ছেড়ে দেয়, তাহলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে এবং পুনরায় নামায পড়তে হবে।


সাহু সিজদা সালাতে ভুল সংশোধনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এটি সালাতের শুদ্ধতা নিশ্চিত করে এবং মুসল্লির নামাযকে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে।


Post a Comment

0 Comments