Adds

কিয়ামতের দিন নবীর সুপারিশ কেমন হবে

সাবধান! আপনি এই মামলার আসামি কি না? BongoCyber Blog Post

সাবধান! ভাবুন, আপনি কি এই মামলার আসামি?

ভূমিকা: কেয়ামতের দিন রাসূল (ﷺ) আল্লাহর কাছে উম্মতের জন্য সুপারিশ করবেন, যা নিঃসন্দেহে শাফায়াতের অন্তর্ভুক্ত। এটি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আক্বীদা। এই সম্পর্কে প্রচুর হাদীস শিশু থেকে শুরু করে বড়দের পর্যন্ত জানা রয়েছে। কিন্তু রাসূল (ﷺ) যদি আল্লাহর কাছে উম্মতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তাহলে আমাদের অবস্থান কী হবে?


পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন:

وَ قَالَ الرَّسُوۡلُ یٰرَبِّ اِنَّ قَوۡمِی اتَّخَذُوۡا هٰذَا الۡقُرۡاٰنَ مَهۡجُوۡرًا

(অর্থ: “আর রাসূল (সেদিন) বলবেন, হে আমার রব! নিশ্চয়ই আমার জাতি এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে।” সুরা আল-ফুরকান, ২৫/৩০)


এই আয়াতে "مَهْجُورً" (মাহজুর) শব্দটির বিভিন্ন অর্থ আছে। এটি যদি "هجر" থেকে গঠিত ধরা হয়, তাহলে এর অর্থ হবে পরিত্যক্ত। অর্থাৎ, তারা কুরআনের প্রতি দৃষ্টি দেয়নি, গ্রহণ করেনি বা এর থেকে কোন প্রভাব গ্রহণ করেনি। অন্যদিকে, যদি এটি "هجر" থেকে গঠিত হয়, তবে এর দুটো অর্থ হতে পারে: এক, তারা একে অর্থহীন মনে করেছে; দুই, তারা নিজেদের উদ্দেশ্যে কুরআনকে অর্থহীন বানিয়েছে এবং নানা ধরনের মন্তব্যে বিদ্ধ করেছে। মুশরিকরা কুরআন পড়ার সময় খুব হৈ-হল্লা করত, যাতে কুরআন শোনা না যায়—এটিও কুরআন পরিত্যাগের একটি প্রকার। কুরআন সম্পর্কে অবিশ্বাসী হওয়া এবং এর আদেশ পালন না করা একইরূপে কুরআন বর্জন করার অন্তর্ভুক্ত।


বিশিষ্ট মুফাসসির ইমাম ইবনু কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “কুরআন না পড়া, কুরআন অনুসারে আমল না করা এবং তা থেকে হিদায়াত গ্রহণ না করা—সবই কুরআন পরিত্যাগের মধ্যে পড়ে।”


ইমাম ইবনুল জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “যার কাছে কুরআন আছে, তার উচিত প্রতিদিন কিছু আয়াত তিলাওয়াত করা, যাতে কুরআন পরিত্যাজ্য না হয়ে যায়।”


হিজরী ৮ম শতাব্দীর শাইখুল ইসলাম ইমাম তাক্বিউদ্দীন আবুল ‘আব্বাস আহমাদ বিন ‘আব্দুল হালীম বিন তাইমিয়্যাহ বলেন, “যে ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করে না, সে কুরআনকে পরিত্যাগ করেছে; যে কুরআন তেলাওয়াত করে কিন্তু তা অনুধাবন করে না, সে-ও কুরআনকে পরিত্যাগ করেছে; আর যে কুরআন তেলাওয়াত করে এবং তা অনুধাবন করে কিন্তু সেই অনুযায়ী আমল করে না, সে ব্যক্তিও কুরআনকে পরিত্যাগ করেছে।”


এভাবে, এই সকল ব্যক্তিরা কিয়ামতের দিন রাসূল (ﷺ) এর বিচারপ্রার্থনার আওতায় আসবে।


কিছু আলিম বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য প্রতি বছরে অন্তত একবার কুরআন খতম না দেওয়া কুরআন পরিত্যাগের অন্তর্ভুক্ত। ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “তুমি নিজের আত্মাকে তিনটি স্থানে খুঁজে দেখ। (১) কুরআন শ্রবণের সময়, (২) যিকির-আযকারের মজলিসে, এবং (৩) নিরিবিলি সময়। যদি এই তিন স্থানে আত্মাকে খুঁজে না পাও, তবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর যেন তিনি তোমাকে আত্মা দান করেন।”


পরিশেষে, প্রিয় পাঠক, আসুন আমরা রমজানের মাসে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করি, তা অনুধাবন করি এবং কুরআনের আলোকে জীবন যাপন করি। আল্লাহ আমাদের সন্তানদের কুরআন শেখার তাওফীক দান করুন—আমীন! আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানি।

astaghfirullah hallaji la ilaha illa

👇 Please Subscribe Our YouTube Channel 👇

Post a Comment

0 Comments