![]() |
| সিয়াম রোজা রেখে স্ত্রী সহবাস করলে করণীয় কি? BongoCyber |
রোজা: শুধু ক্ষুধা নয়, আত্মশুদ্ধি 🕊️
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম — রমজানের সিয়াম (রোজা)। রোজা কেবল ক্ষুধা-তৃষ্ণা এড়ানো নয়; এটি আত্মার প্রশিক্ষণ, ধৈর্য, ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম। তাই শরীয়তসম্মত কারণ ছাড়া রোজা ভঙ্গ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং গোনাহের জাতি হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে রোজা অবস্থায় স্ত্রী-সহবাস করা এক গুরুতর অপরাধ—এটি কেবল দায় নয়, বরং শাস্তিসংকুল কাজও বলা হয়েছে। 🔒
হাদিসে যা বর্ণিত আছে 📜
আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
“একদিন ফজরের নামাজের সময় রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, ‘গতরাতে আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি—কিছু লোককে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হলো; তাদের পায়ের গোছা বাঁধা ছিল এবং মুখ থেকে রক্ত ঝরছিল। তারা ছিল সেই লোকেরা যারা রোজা ভেঙে ইফতার করত।’”
(মু‘জামুল কাবীর হা/৭৬৬৭; সহীহ ইবনে খুজায়মাহ হা/১৯৮৬)
এই হাদিস থেকে স্পষ্ট — রোজা ভঙ্গের পরিণতি ন্যায্যভাবে গুরুতর হতে পারে। ⚖️
ফিকহীয় দিক-দর্শন: রোজা অবস্থায় স্ত্রী-সহবাস করলে কী করতে হবে? 🛑
যদি কেউ রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী-সহবাস করে, তখন ইসলামীয় বিধান অনুযায়ী তার দায়গুলো হলো:
- রোজা কাযা (পূনরায় রোজা রাখা) — ভেঙে ফেলা/ন্যায্যতা পূরণের জন্য রোজা পুনরায় রাখা আবশ্যক।
- কাফফারা (ক্ষতিপূরণ) — কাফফারার ধাপগুলো:
- প্রথমে একজন দাস মুক্ত করা (ঐতিহাসিক বিধান; আজকের প্রেক্ষাপটে বাস্তবে প্রয়োগ না হলে পরবর্তীর ধাপ গ্রহণ করা যায়)।
- যদি দাস মুক্ত করা সম্ভব না হয় — একটানা ৬০ দিন রোজা রাখা।
- যদি তা সম্ভব না হয় — ৬০ জন দরিদ্রকে খাওয়ানো (প্রতিজনকে একটি মেয়াদীয় আহার প্রদান)।
⚠️ যৌনাঙ্গীয় মিলনের ফলে যদি সৃষ্ট কোনো নির্দিষ্ট শারীরিক ঘটনা (যেমন:স্খলন/স্খলিত হোক) হয়ে থাকে, তাহলে ফিকহী বিস্তারিত-বিধি অনুসারে কাজ করতে হবে — স্থানীয় আলেম/ইমাম বা ফিকহীর সঙ্গে পরামর্শ নেয়া উত্তম।
ইচ্ছাকৃত না কি অনিচ্ছাকৃত?— নীতিগত বিবেচনা 🧭
- অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা/অপরিকল্পিত ঘটনা (যেমন ভুলবশত ঘুমে এমন ঘটনা, বা অজানা অবস্থায় ভুল করে এমন কিছুর ঘটলে) — এখানে তফসিল ভিন্ন; অধিকাংশ মাশায়েখ তওবার পর ও কিছুকিছু শর্তে রেহাই দিতেও পারেন।
- ইচ্ছাকৃত/জানতে-চেষ্টা করে এমন ঘটনা—এমন অবস্থায় কঠোর বিধান ও কাফফারা প্রযোজ্য এবং অবশ্যই আন্তরিক তওবা দরকার। 🙏
ইমাম যাহাবীর কটু সতর্কবাণী 🗣️
ইমাম যাহাবী (রঃ) বলেছেন, কোনো কারণ নেই বলে রোজা ত্যাগ করা এমন অপরাধ, যা একজন মদ্যপায়ী বা ব্যভিচারীর থেকেও নিকৃষ্ট। তাই রোজা ভঙ্গকারীর কর্তব্য হলো সতর্ক অনুশোচনা (তওবা) করা ও ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজ না করার প্রতিজ্ঞা করা। ❤️🩹
সফরকালীন রোজা: রাহত আছে কিন্তু উত্তম কী? 🧳
রমজানে সফরকারীর জন্য রোজা ত্যাগের ছাড় আছে। তবে সফর যদি অত্যন্ত কষ্টকর না হয়, তবুও রোজা পালন করাই উত্তম ও সওয়াববান বলে বিবেচিত। 🕊️
FAQs — প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি ❓
Q1: রোজা রেখে যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে কী হবে?
A: অনিচ্ছাকৃত ঘটনার ক্ষেত্রে শাস্তি ও কাফফারা অনেক সময় ভিন্নভাবে বিবেচিত হয়। স্থানীয় ফিকাহ বা আলেমের পরামর্শ নিন। আন্তরিক তওবা প্রয়োজন।
Q2: কাফফারা কীভাবে পরিমাপ করা হয়?
A: কাফফারা ধাপে ধাপে: (১) দাস মুক্ত করা (ঐতিহাসিক), (২) ৬০ দিন ধারাবাহিক রোজা, (৩) ৬০ জন দরিদ্রকে খাওয়ানো — যদি আগের দুইটি সম্ভব না হয়।
Q3: এরকম ভুল থেকে মুক্তি পেতে করণীয় কী?
A: সতর্ক অনুশোচনা (তওবা), গোনাহের মধ্যে ক্ষমা প্রার্থনা, কাফফারা আদায় করা এবং ভবিষ্যতে সুসংস্কৃত জীবনযাপনে অঙ্গীকার নেওয়া।
কল-টু-অ্যাকশন (Call to Action)
📌 আপনি যদি বিস্তারিত ফিকহীয় পরামর্শ চান বা আপনার অবস্থার ওপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগত দিক-নির্দেশনা প্রয়োজন, তাহলে আপনার স্থানীয় ইমাম বা শুন্য-সাল্লাহ-কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
💬 নিচে মন্তব্য করে আপনার প্রশ্ন রাখুন — আমি সাধ্য অনুযায়ী বিশদ ব্যাখ্যা দেব। (অনুগ্রহ করে ব্যক্তিগত বা সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করবেন না।)

0 Comments
Please Do Not Enter Any Spam Link In The Comment Box.