Adds

সফর অর্থ কি? ইসলামের দৃষ্টিতে সফরের নির্দিষ্ট দূরত্ব আছে কি? এবং মুসাফিরের রোযার বিধান কি?

সফর অর্থ, দূরত্ব, এবং মুসাফিরের রোযার বিধান — ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে জানুন বিস্তারিত



🕋 ভ্রমণ বা সফর আমাদের জীবনেরই এক অংশ। কখনও কাজের প্রয়োজনে, কখনও ইবাদতের জন্য — আমরা সফরে বের হই। কিন্তু প্রশ্ন হলো 👉 “সফর আসলে কী? এর নির্দিষ্ট দূরত্ব কত? এবং সফরে রোযা রাখা কি ফরজ?
চলুন জেনে নিই কুরআন-হাদীস ও আলেমদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সঠিক ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি 🌿



🕌 সফর অর্থ কী?

‘সফর’ (سفر) শব্দটি আরবি, যার অর্থ — ভ্রমণ করা, প্রকাশিত হওয়া, অতিক্রম করা ইত্যাদি
ভ্রমণের সময় মানুষ অনেক দূর যায়, নতুন পরিবেশে আল্লাহর নিদর্শন দেখে — এই কারণেই ভ্রমণকে “সফর” বলা হয়।
সহজভাবে বলতে গেলে 👉 নিজ বাসস্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণে যাওয়া মানেই সফর।
আর যে ভ্রমণ করে, তাকে বলা হয় মুসাফির (مسافر) — অর্থাৎ ভ্রমণকারী ব্যক্তি



🛣️ সফরের নির্দিষ্ট দূরত্ব কত?

📖 কুরআন ও হাদীসে সফরের নির্দিষ্ট কোনো দূরত্ব নির্ধারিত নেই
তবে ইসলামী আলেমদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে —

  • কেউ বলেন ৪৮ কিলোমিটার,
  • কেউ বলেন ৭২ কিলোমিটার,
  • আবার অনেকে বলেন ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত হলে সেটি সফর হিসেবে গণ্য হবে।


➡️ অধিকাংশ ফকীহদের মতে, ৮০ কিলোমিটার বা তার বেশি পথ পাড়ি দিলে একজন ব্যক্তি মুসাফির হিসেবে বিবেচিত হবেন।
এবং তখন তাঁর জন্য কসর নামাজ ও রোযা ভঙ্গ করার সুযোগ থাকবে।
📚 (ইমাম উসাইমীন, আশ-শারহুল-মুমতি, খণ্ড: ৪, পৃ: ৪৯৭–৪৯৮)




🌙 সফরে রোযার বিধান (সিয়াম)

🕋 কুরআন, সুন্নাহ ও মুসলিম উম্মাহর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী —
মুসাফিরের জন্য রোযা ভঙ্গ করা বৈধ।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

"আর তোমাদের কেউ যদি অসুস্থ হয় বা সফরে থাকে, তবে অন্য দিনগুলোতে সে রোযা পূরণ করবে।"
📖 — সূরা আল-বাকারা (২:১৮৪)

তবে রোযা ভঙ্গ করার আগে 👇

👉 নিজের শহর বা গ্রামের সীমানা অতিক্রম করতে হবে
যখন প্রকৃত অর্থে মুসাফির হওয়া নিশ্চিত হবে, তখনই রোযা ভঙ্গের অনুমতি থাকবে।
📚 (ইমাম উসাইমীন, ফাতাওয়াআস-সিয়াম, পৃ: ১৩৩)



🧭 সফরে রোযা ভঙ্গের শর্তাবলী

১️⃣ দীর্ঘ সফর হতে হবে — যেখানে নামাজ কসর করা যায়।
২️⃣ শহর/গ্রামের সীমানা অতিক্রম করতে হবে — ভেতরে থাকলে রোযা ভাঙা যাবে না।
৩️⃣ সফর বৈধ উদ্দেশ্যে হতে হবে — গুনাহর জন্য সফর বৈধ নয়।
৪️⃣ রোযা ভাঙার জন্য সফর করা যাবে না — শুধুমাত্র রোযা না রাখার উদ্দেশ্যে সফরে গেলে তা হারাম।



🌤️ মুসাফিরের জন্য রোযা রাখা উত্তম নাকি ভাঙা?

মুসাফিরের তিনটি অবস্থা হতে পারে 👇

🟢 ১️⃣ রোযা রাখতে কষ্ট না হলে

👉 রোযা রাখা উত্তম, তবে ভাঙাও বৈধ।

🟡 ২️⃣ কিছুটা কষ্ট হলে

👉 রোযা রাখা মাকরূহ, বরং ভাঙা ভালো।

🔴 ৩️⃣ অত্যন্ত কষ্ট হলে

👉 রোযা রাখা হারাম, এবং ভাঙা ওয়াজিব

🕊️ সারাংশ:
যদি রোযা রাখতে কষ্ট না হয় — রোযা রাখা উত্তম 💫
কষ্ট হলে — ভেঙে পরে কাযা করা শ্রেয় 🌸


🌿

ইসলাম মানুষের কষ্ট চায় না। তাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সফর বা অসুস্থতার সময় রোযার ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছেন
তবে যদি কষ্ট না হয়, তাহলে সফরে থেকেও রোযা রাখলে আল্লাহর সন্তুষ্টি আরও বেশি পাওয়া যায় 💖



👇 Please Subscribe Our YouTube Channel 👇

Post a Comment

0 Comments