যদি সন্দেহজনক কিছু বা কোনো তাবিজ পাওয়া যায়, সেটি নষ্ট করার জন্য একটি পাত্রে পানি নিন। তারপর সেই পানিতে নিম্নোক্ত আয়াতগুলো পড়ে ফুঁ দিন:
সুরা আ'রাফ (আয়াত ১১৭-১২২),
সুরা ইউনুস (আয়াত ৮১-৮২),
সুরা ত্বহা (আয়াত ৬৯)
এরপর সূরা ফালাক্ব ৩ বার এবং সূরা নাস ৩ বার পড়ে পানিতে ফুঁ দিন।
সুরা আরাফের আয়াতগুলো:
وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ﴿١١٧﴾ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿١١٨﴾ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ﴿١١٩﴾ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ﴿١٢٠﴾ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿١٢١﴾ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ﴿١٢٢﴾
সুরা ইউনুসের আয়াতগুলো:
فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ ﴿٨١﴾ وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ ﴿٨٢﴾
সুরা ত্বহার আয়াত:
وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ ﴿٦٩
এরপর তাবিজ বা জাদুর জিনিসগুলো খুলে আলাদা আলাদাভাবে পানিতে ভিজিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। ইনশাআল্লাহ, এতে জাদু নষ্ট হয়ে যাবে। এরপর সেগুলো এমন স্থানে ফেলে দিন যেখানে মানুষের যাতায়াত নেই।
✅ লক্ষণীয় এবং প্রতিকার:
১। তাবিজ, পুতুল, কাগজ বা যাদুকরের দেওয়া যেকোনো কিছু উপরের আয়াতগুলো পড়া পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। কাগজে লেখা থাকলে পানিতে রেখেই তা ঘষে মুছে ফেলুন। লেখা মুছে গেলে কাগজটি ছিঁড়ে ছোট ছোট টুকরো করুন। তারপর টুকরোগুলো শুকিয়ে বা কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলুন। পুড়ানোর সময় ধোঁয়া নিশ্বাসের সঙ্গে টানবেন না।
২। তাবিজ খালি হাতে না ধরে গ্লাভস ব্যবহার করা উত্তম। গ্লাভস না পেলে পলিথিন মুড়িয়ে বা রুকইয়ার আয়াত পড়া তেল হাতে মেখে নিতে পারেন। তাবিজ ধরার আগে এবং নষ্ট করার সময় বারবার সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়তে থাকুন।
৩। তামা বা অন্যান্য ধাতুর তৈরি তাবিজ বা আংটিতে খোদাই করা থাকলে তা ঘষে ঘষে মুছে ফেলুন। মুছতে না পারলে পুড়িয়ে লেখাটি মুছে ফেলুন। যদি নিজে না করতে পারেন, স্বর্ণকারের সহায়তা নিন।
৪। তাবিজে যদি গিঁট দেয়া থাকে, প্রতিটি গিঁট সাবধানে খুলুন। পুতুল, মূর্তি, পাখি বা মাছের মতো কিছু পেলে, তাদের গায়ে কোনো পিন আছে কিনা খেয়াল করুন। থাকলে পিনগুলো খুলে পানিতে ডুবিয়ে রাখুন।
৫। জীবন্ত কিছু, যেমন পাখি পাওয়া গেলে তার ডানার নিচে এবং শরীরের প্রতিটি স্থানে কোনো তাবিজ, পিন বা সন্দেহজনক কিছু আছে কিনা যাচাই করুন। থাকলে তা সাবধানে খুলে, তাবিজ নষ্টের পানি দিয়ে ভিজিয়ে পাখিকে ছেড়ে দিন। তাবিজের ভেতরে কাগজ ছাড়াও অন্যান্য কিছু থাকতে পারে। তাবিজ খুলতে গেলে অনেক সময় খোলস ভাঙতে হতে পারে। ভাঙা টুকরোগুলোসহ সবকিছু পানিতে ঢালুন। একইভাবে যাদুকরের দেয়া তেলপড়া, পানিপড়া ইত্যাদি জিনিসপত্র পানিতে ঢালুন।
৬। কোনো বাড়ির দেয়াল, ফ্লোর বা অন্য স্থানে তাবিজ আঁকা বা খোদাই করা থাকলে তা ঘষে মুছে ফেলুন। এরপর তাবিজ নষ্টের পানি সেখানে ছিটিয়ে দিন। অনেক সময় বাড়ি নির্মাণের সময় কোণায় তাবিজ রেখে দেয়া হয়। তাবিজ না তুলতে পারলে সেই কোণাগুলোতে তিন দিন ধরে আয়াত পড়া পানি ছিটিয়ে দিন এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন তাবিজ নষ্ট হয়ে যায়।
৭। জ্যোতিষীর দেওয়া বিশেষ কোনো আংটি থাকলে সেটি তাবিজ নষ্টের পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর পাথরটি ভেঙে ফেলে দিন। জ্যোতিষীরা পাথরের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে, তাই কোনোভাবেই পাথরটি রেখে দেয়া উচিত নয়।
৮। তাবিজ নষ্ট করার পরে ব্যবহৃত পানি এবং পোড়ানো তাবিজ ফেলার জন্য মানুষের যাতায়াত নেই এমন কোনো স্থান বেছে নিন। জাদুর জিনিসপত্র নষ্ট করার পর সেগুলো সাধারণ ময়লার সাথে বা ব্যবহার্য জিনিসপত্রের মাঝে ফেলে দেবেন না।
৯। যদি কোনো রাস্তায়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, বাড়ির আশেপাশে, ফুলের টবে বা সন্দেহজনক স্থানে তাবিজ রাখা আছে বলে মনে হয়, সেখানে তিন দিন ধরে আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে ছিটিয়ে দিন বা পানি ঢেলে দিন। যদি কোনো নির্দিষ্ট স্থানে জাদুর জিনিস থাকার স্বপ্ন দেখেন কিন্তু খুঁজে না পান, তখনও একই নিয়ম অনুসরণ করুন।
তাবিজ, কবচ, বালা, অস্ত্রধাতুর আংটি এবং জাদু বা কুফর থেকে সর্বদা দূরে থাকবেন। এগুলো ব্যবহার করা শির্কের অন্তর্ভুক্ত।
👇 Please Subscribe Our YouTube Channel 👇
0 Comments
Please Do Not Enter Any Spam Link In The Comment Box.