স্ত্রী কি তার স্বামীর আনুগত্য করতে বাধ্য?
নবিজীর সতর্কবার্তা
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, একবার তাঁকে জাহান্নাম দেখানো হয়। সেখানে তিনি দেখেন অধিকাংশ অধিবাসী হলো নারী। সাহাবীরা প্রশ্ন করেন:
❓ “এরা কি আল্লাহর সাথে কুফরী করে?”
![]() |
স্ত্রী কি তার স্বামীর আনুগত্য করতে বাধ্য? |
নবিজীর উত্তর ছিল:
"না, ❝এরা স্বামীর অবাধ্য ও অকৃতজ্ঞ।❞"— [সহীহ বুখারী: ২৯]
এখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে:
1️⃣ জাহান্নামে নারীর সংখ্যা বেশি এবং এর মূল কারণ কুফরী নয়, বরং স্বামীর প্রতি অবাধ্যতা ও অকৃতজ্ঞতা।
2️⃣ এই অবাধ্যতা একটি পাপ, যা তাদের জন্য জাহান্নামের দরজা খুলে দেয়।
➡️ অর্থাৎ, স্ত্রীর স্বামীর আনুগত্য করা আবশ্যক, এটি কোনো অপশন নয়।
কুরআনে স্বামীর কর্তৃত্ব ও স্ত্রীর আনুগত্য
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
"পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, কারণ আল্লাহ তাদের একের ওপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং তারা তাদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত। যারা অবাধ্য, তাদের সদুপদেশ দাও, বিছানায় ত্যাগ কর এবং (মৃদু) প্রহার কর। এরপরও যদি তারা আনুগত্য করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ মহান।"— [সূরা আন-নিসা ৪:৩৪]
অনুগত্য না মানলে কী হয়?
- স্বামী প্রথমে পরামর্শ ও ধৈর্য দেখাবেন।
- এরপর স্ত্রীর সঙ্গে অলসতা বা দূরত্ব বজায় রাখবেন।
- যদি এখনও আনুগত্য না হয়, মৃদু প্রহার করা যেতে পারে।
এই কর্তৃত্ব স্বামীকে আল্লাহ প্রদত্ত অধিকার, এটি শুধুমাত্র শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য, কোনও ধরনের অন্যায়ের জন্য নয়।
নবীজীর মেটাফোর: সিজদাহ 🕋
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
"আমি যদি কাউকে সিজদাহ করার অনুমতি দিতাম, তবে স্ত্রীদেরকে নির্দেশ দিতাম স্বামীদেরকে সিজদাহ করার। কারণ আল্লাহ স্ত্রীর ওপর স্বামীর অধিকার দিয়েছেন।"— [সুনানে আবু দাউদ: ২১৪০, জামে আত-তিরমিজি: ১১৫৯]
➡️ এখানে বোঝানো হয়েছে, স্বামীর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য যেন স্ত্রীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নারী-পুরুষ সমতা ইসলামে ❌
আল্লাহ বলেন:
"নারীদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে।"— [সূরা বাকারা ২:২২৮]
- ইসলাম নারী-পুরুষকে সবকিছুতে সমান বলে না।
- পুরুষের কিছু দায়িত্ব এবং মর্যাদা নারীর চেয়ে আলাদা।
- নারীরা যারা স্বামীর খেদমত ও ঘর-সংসার পরিচালনা করে, তাদের সওয়াব সমানভাবে প্রদান করা হয়, যেসব ইবাদাত পুরুষরা বাইরে করতে পারে।
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের সঠিক ধারণা 💖
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নারীরা যেসব কাজ করলে জান্নাতের দরজা খুলবে:
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ✅
- রমজান মাসের রোজা 🌙
- সতীত্ব রক্ষা 👗
- স্বামীর আনুগত্য 👨👩👧
— [সহীহ ইবনে হিব্বান: ৪২৫২]
আনুগত্যের দুই ধরন
- শর্তহীন আনুগত্য – শুধুমাত্র আল্লাহ ও নবীজীর প্রতি।
- শর্তযুক্ত আনুগত্য – পরিবার বা অন্য কারো প্রতি, যদি আল্লাহ ও নবীর নির্দেশের সাথে সংঘাত না হয়।
💡 উদাহরণ:
- নারী যদি নফল রোজা রাখতে চায়, স্বামীর অনুমতি প্রয়োজন।
- পুরুষকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
- স্ত্রী যদি স্বামীর অনুমতি মেনে চলেন, তিনি পুরুষদের সওয়াবের সমান সওয়াব পাবেন।
দাম্পত্য জীবনের ভিত্তি: ভালোবাসা ও দয়া ❤️
ইসলাম শুধু শৃঙ্খলা নয়, বরং স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা ও দয়া (মাওদ্দাহ ওয়ারাহমাহ) প্রতিষ্ঠা করে।
- শৃঙ্খলা রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু দাম্পত্য জীবনের প্রাণশক্তি হলো মহান ভালোবাসা ও সহমর্মিতা।
📝
- স্ত্রীকে স্বামীর আনুগত্য করা আবশ্যক।
- আনুগত্য শুধুমাত্র শার'ঈভাবে সীমাবদ্ধ, আল্লাহ ও নবীর আদেশের বিপরীতে যাবে না।
- স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মূল শক্তি হলো ভালোবাসা ও দয়া, কিন্তু শৃঙ্খলা বজায় রাখাও অপরিহার্য।
- নারীরা ঘর-সংসার ও স্বামীর খেদমত করলে জান্নাতের সওয়াব পাবেন, যা সমান পুরুষদের বাহ্যিক ইবাদতের সওয়াবের।
👇 Please Subscribe Our YouTube Channel 👇

0 Comments
Please Do Not Enter Any Spam Link In The Comment Box.