নীলুকে আজকাল আমার অসহ্য লাগে!
এটা একটু-আধটু খারাপ লাগা নয়, বরং পুরোপুরি অসহ্য! 😤
নীলু আমার স্ত্রী। 💍 আমাদের বিয়ে হয়েছে ১৬ বছর। 🗓️
এমন নয় যে শুরু থেকেই আমার এমন লাগত। কিন্তু এখন ওকে দেখলেই বিরক্ত লাগে। 😒
![]() |
একটি অসমাপ্ত ভালোবাসার গল্প | An Unfinished Love Story | BongoCyber |
আপনারা হয়তো ভাবছেন, আমার চরিত্রে সমস্যা 😏— হয়তো অন্য কোনো মেয়ের সাথে সম্পর্ক 👫, বা মধ্য চল্লিশে এসে অল্প বয়সী মেয়েদের পছন্দ করতে শুরু করেছি। কিন্তু ব্যাপারটা সেরকম নয়।
👉 ভাবুন তো, দিন শেষে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে একটু হাসিমুখ দেখার আশা থাকে সবারই, তাই না? 😊
কিন্তু বাড়িতে ঢুকেই যদি দেখেন, কেউ পেঁচার মতো মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে 😠, দরজা ধাম করে বন্ধ করে দিচ্ছে—আপনার দিকে না তাকিয়ে! 😒
খেতে বসলে ভাতের প্লেট ধাম করে রেখে দেয় টেবিলে। 🍽️
রান্না অসাধারণ! প্রতিটি খাবার সুন্দরভাবে সাজানো 🥘, পাশে পানির গ্লাসও রাখা। কিন্তু একটু পাশে বসে মিষ্টি করে কথা বলা, সেটা নেই! 😕
আমাকে খাবার দিয়ে চায়ের কাপ ☕ হাতে বারান্দায় চলে যায়। কিছু বললে বিরক্তির সুরে ছেন ছেন করে উত্তর দেয়। 😑
এটা তো খাবারের কথা। আর রাতের কথা বললে? 😔
নিস্পৃহ, নির্লিপ্ত যৌনজীবন—মনে হয় আমি যেন জোর করে কিছু করছি। 😣
আমি কি সেই রকম অত্যাচারী স্বামী নাকি? 😠 মাঝেমধ্যে একটু আদর করে কিছু বলার চেষ্টা করলে, ওর অদ্ভুত দৃষ্টি 🙄—তারপর আস্তে বলে, "তোমার হয়েছে?" 😑
আর কিছু বলার ইচ্ছাই থাকে না...
মনে আছে, বিয়ের পর কাজে বেরোনোর আগে ওর সেই মিষ্টি হাসি! 😍
আমি একটা চুমু খেয়ে বের হতাম 😘—দিনটা স্বপ্নের মতো শুরু হত! ✨
সারাদিন শুধু বাড়ি ফেরার জন্য অপেক্ষা করতাম। ⏳
সেই সময় দিনে দু-তিনবার ফোন 📞 আসত: "খেয়েছো? মাথা ধরেছে? অ্যান্টাসিড খেলো তো?" 💬
এসব প্রশ্ন এত মধুর লাগত! 💖
আর এখন? ফোনই আসে না। 😔
যদি আসে, তাও একগাদা অভিযোগ নিয়ে! 😩
জীবনটা একেবারে তেনা তেনা হয়ে গেছে। 😔
সেদিন আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু জাহিদের সাথে এসব নিয়ে আলোচনা করছিলাম। জাহিদ বলল:
—"তোকে একজনের ঠিকানা দিচ্ছি, তার সাথে দেখা কর। খুব ভালো কাজ হয়।"
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
—"পীর-ফকির নাকি? 🧙♂️"
জাহিদ হেসে ফেলল। 😄 সিগারেট ঠোঁট থেকে সরিয়ে, ধোঁয়া ছেড়ে মুচকি হেসে বলল:
—"আরে না, কাউন্সেলিং আর কি। ঠিকানা টেক্সট করে দিচ্ছি।" 📲
পরদিন সন্ধ্যা নাগাদ আমি বেশ উৎসাহ নিয়ে ধানমন্ডিতে সেই ঠিকানায় চলে গেলাম। 🏙️
ভদ্রলোকের অ্যাপার্টমেন্টটা লেকের পাশে, ছিমছাম ও নিরিবিলি। 🌿 লিফটে চড়ে চারতলায় উঠলাম। বেল বাজাতেই ভদ্রলোক নিজেই দরজা খুললেন। 😌
আমাকে নিয়ে গেলেন বিশাল ড্রইংরুমে।
👉 দুই সেট সোফা, লাগোয়া বারান্দা—যেখানে ভরতি ফুলের গাছ 🌸🌿, আর একটা দোলনা দুলছে। 🎐
বারান্দা থেকে লেকের মনোরম দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। কেমন একটা শান্তি শান্তি ভাব... মনটা একদম জুড়িয়ে গেল। 😌
ভদ্রলোকের দিকে ভালো করে তাকালাম—অত্যন্ত সুদর্শন লোক। বয়স ৩৫-ও হতে পারে, আবার ৫৫-ও হতে পারে। বোঝা মুশকিল। 👓 চোখে সোনালী ফ্রেমের চশমা, মাথায় কাঁচাপাকা চুল। বয়স লুকানোর কোনো চেষ্টা নেই, বরং এতে করে তার ব্যক্তিত্ব আর সৌন্দর্য আরো বেড়েছে। 💫 ছিপছিপে অবয়ব, দেখে বোঝা যায় নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। 💪 আমার মতো খেতে খেতে পেট মোটা হয়ে যায়নি। 😅
ভদ্রলোক হাসিমুখে বললেন,
—"চা-কফি কিছু চলবে? ☕"
আমি বিনয়ের সাথে বললাম,
—"না, ঠিক আছে।"
তিনি বললেন:
—"আমি আসলে এক কাপ ব্ল্যাক কফি খাবো। একা একা খেতে একটু অস্বস্তি লাগছে। আপনাকেও এক কাপ দেই?" ☕🙂
—"আচ্ছা, দিন।" 😊
ভদ্রলোক নিজেই কফি বানিয়ে আনলেন। তারপর আমার উল্টো দিকের সোফায় বসে কফির কাপে চুমুক দিলেন। তার চোখে-মুখে পরিতৃপ্তির ছাপ স্পষ্ট। 😌
তার দেখাদেখি আমিও কফিতে চুমুক দিলাম, কিন্তু সাথে সাথেই মুখ বিকৃত করে ফেললাম। 😖
আমি সাধারণত চা খাই, কফি খাই না। নিলু আমার জন্য বেশি করে দুধ আর চিনি দিয়ে চা বানিয়ে দেয়। এরকম তেতো কফি আমি জীবনে কখনও খাইনি। 🤢 ভদ্রলোক বুঝতে পারলেন আমার অবস্থা, হেসে বললেন:
—"কী, স্ত্রীর বানানো চায়ের কথা মনে পড়ছে?" 😄
আমি এক টু চমকে উঠে মৃদু হেসে বললাম,
—"ঠিকই ধরেছেন!" 😊
ভদ্রলোক আমাকে কয়েকটা কাগজ দিয়ে বললেন,
—"চট করে এগুলো পূরণ করুন।" ✍️
আমি দেখলাম সেগুলোতে নাম, ঠিকানা, পেশা—সাধারণ প্রশ্ন। সব পূরণ করে ফেরত দিলাম। ভদ্রলোক কাগজগুলো দেখে বললেন,
—"এবার বলুন, আপনার সমস্যা কী?" 🤔
—"আমার কোনো সমস্যা নেই।" 😐
—"ও আচ্ছা, তাহলে গল্প করতে এসেছেন?" 😏
—"ইয়ে মানে, সমস্যাটা আমার স্ত্রীর।" 😬
—"স্ত্রীর নাম?"
—"নিলুফার।"
—"আপনি কি তাকে নিলু বলে ডাকেন?"
—"জি।"
—"আমরাও তাহলে নিলু বলেই কথাবার্তা চালিয়ে যাই?"
—"ঠিক আছে।"
—"তাহলে এবার বলুন, নিলুর কী সমস্যা?"
—"অনেক সমস্যা। ওকে দেখলেই অসহ্য লাগে।" 😖
—"ওকে কি খুন করতে ইচ্ছে করে?"
আমি চমকে উঠলাম! 😳
—"আস্তাগফিরুল্লাহ! এসব কী বলছেন?" 😧
ভদ্রলোক একদম ভাবলেশহীন মুখে বললেন,
—"কিছু প্রশ্ন করব, হ্যাঁ বা না-তে উত্তর দিন।"
—"ঠিক আছে।"
—"খুন করতে ইচ্ছে করে?"
—"না!" 😨
—"ডিভোর্স দিতে ইচ্ছে করে?"
—"না, সেরকম কিছু না।"
—"সমস্যা ঠিক হলে আবার ভালো লাগবে?"
—"হ্যাঁ, খানিকটা।" 🤔
ভদ্রলোক এবার ব্যক্তিগত প্রশ্ন শুরু করলেন:
—"আপনার অন্য কোথাও সম্পর্ক আছে?"
—"না।"
—"আপনার স্ত্রীর?"
—"একেবারেই না।" 😤
—"তাহলে কেন অসহ্য লাগে?"
আমি একটু থতমত খেলাম, তারপর বললাম:
—"অনেস্টি দিয়ে জীবন চলে না, আরো কিছু লাগে।" 😔
ভদ্রলোক এবার গা ছেড়ে বসে বললেন,
—"তাহলে বলুন, কী কারণে অসহ্য লাগে?"
আমি বলতে শুরু করলাম, আর তিনি নোট নিলেন। ✍️
৪০-৪৫ মিনিটের পর্ব শেষে আমি পানি চাইলাম। 🥤
এক গ্লাস বরফশীতল পানি খেয়ে দ্বিতীয় গ্লাসও শেষ করলাম। 😌
তারপর কপালের ঘাম মুছে ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বললাম...
- এবার বলুন, আমার কি করা উচিত?
ভদ্রলোক একটু থেমে কথা শুরু করলেন:
আপনার উচিত আপনার স্ত্রীর কাছে 🕒 সময় দেওয়া, তাকে 🤔 বুঝতে চেষ্টা করা এবং 🤝 সহযোগিতা করা। এতক্ষণের আলোচনায় আপনি তার বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেছেন। এ সমস্যাগুলো কিন্তু একদিনে তৈরি হয়নি। ধরুন, আপনার স্ত্রী, আপনি কাজে যাওয়ার আগে 😊 মিষ্টি করে কথা বলতেন; মাঝে মাঝে 📞 ফোন করে খোঁজ নিতেন। আপনি অফিস থেকে ফিরে এলে পাশে বসে 🍽️ খাবার পরিবেশন করতেন। আপনার 🍆 সেক্সুয়াল লাইফও অনেক ইন্টারেস্টিং ছিল, নিঃসন্দেহে। কিন্তু এখন সেসব কিছুই নেই; এটা তো একদিনে হয়নি। একবার মনে করে দেখুন যে আগে আপনার স্ত্রী যখন এই কাজগুলো করতেন, তখন আপনি কি করতেন?
আমি কি করতাম মানে?
মানে, আপনি নিঃসন্দেহে তখন তার সঙ্গে 👍 ভালোভাবে কথা বলতেন। তার খাবারের 🙌 প্রশংসা করতেন। কাজ থেকে ফেরার সময় তার জন্য 🎁 হাতে করে কিছু নিয়ে আসতেন। কিন্তু একসময় আপনি ধীরে ধীরে আপনার অংশটুকু বাদ দিয়ে দিলেন। এবং দেখা গেল তারপরও আপনি আপনার প্রাপ্যটুকু ঠিকই পাচ্ছেন। দিনের পর দিন এভাবেই চলতে থাকল। তার ❤️ যত্ন কিংবা 💖 ডেডিকেশন, কোনটাই কমলো না; কিন্তু আপনার 🧐 আচরণ বদলে গেল। আপনি তাকে ‘Take for granted’ ধরে নিলেন। ধরে নিলেন, এই পাওয়াগুলো আপনার 🎟️ জন্মগত অধিকার। এবং এর বিনিময়ে, আপনার তাকে দেওয়ার মতো কিছুই নেই।
অফিসে আপনার স্ত্রী আপনাকে আগের মতো আর 📞 ফোন করে খোঁজ খবর নেন না—এই অভিযোগ করছেন আপনি; অথচ আপনি কি নিজে 📱 ফোন করে তার খোঁজ নিচ্ছেন? উনি 💊 ওষুধ খেয়েছেন কিনা জানতে চেয়েছেন?
আপনি অভিযোগ করেছেন উনি 🌙 রাত জেগে না ঘুমিয়ে ফোন নিয়ে বসে থাকেন। আপনি কি জানতে চেয়েছেন, তার 😴 ঘুমের সমস্যা কেন হচ্ছে? তাকে কখনো 🩺 ডাক্তার দেখানোর কথা ভেবেছেন? ভাবেননি। শুধু 😠 বিরক্ত হয়েছেন; কারণ আপনার 😴 ঘুমের সমস্যা হচ্ছে। আপনি খাওয়ার সময় আগে আপনার স্ত্রী পাশে বসে 🗣️ গল্প করতেন; এখন আর করছেন না। একসময় নিশ্চয়ই খুব 🙋 আগ্রহ নিয়ে গল্প করেছেন, কিন্তু আপনি শুনতে চাননি; নিজের 🌍 জগতে ব্যস্ত ছিলেন, ফোন নিয়ে বসে ছিলেন। নীলু কষ্ট করে 🍳 রান্না করেছেন, কিন্তু আপনি তাকে 🙏 ধন্যবাদ পর্যন্ত না দিয়ে খাওয়া শেষ করে উঠে গেছেন। রান্নার 🙌 প্রশংসা করা তো কোন ছার।
আমার 😡 মেজাজ গরম হতে শুরু করলো। মনে হচ্ছে না কোনো 🧑⚕️ সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে এসেছি। মনে হচ্ছে 🏠 নীলুর বাবার বাড়িতে চলে এসেছি। এই ভদ্রলোক নীলুর হারিয়ে যাওয়া ভাই। আমার সমস্যার সমাধান না করে নীলুর হয়ে 👨⚖️ ওকালতি করে যাচ্ছেন।
ভদ্রলোক একটু 😄 হেসে বললেন:
আপনার নিশ্চয়ই আমাকে খুব 🙄 বিরক্তিকর লাগছে। মনে হচ্ছে আমি আপনাকে 👎 দোষ দিচ্ছি। আসলে ব্যাপারটা সেটা না। নীলু একটা 📈 PHASE এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এটাকে বলে PMS। 🩺 প্রিমেনোপোজাল সিনড্রোম। হরমোনের ঘাটতির কারণে এমনটা হয়। আমাদের দেশের মহিলাদের মধ্যে সাধারণত এটা বয়সের আগেই ঘটে থাকে। এই সময়ে তাদের 😩 ক্লান্ত, 😤 খিটখিটে মেজাজের হয়ে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। রাতে 😴 ঘুম না আসা, 💢 শারীরিক অস্বস্তি, এগুলো খুবই 📉 কমন ব্যাপার। এ সময় তাদের একটু 🤗 এক্সট্রা সাপোর্ট এর দরকার হয়। অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই বয়সে এসে তারা তাদের পারিপার্শ্বিক মানুষের কাছ থেকে সাপোর্ট তো পান না, উল্টো তাদের পরিচিতজনরা সে সময় নানা 😒 অভিযোগ নিয়ে বসে যান। এতে করে তাদের হতাশা আরো বাড়ে। এবং ব্যাপারটা 🔄 চক্রাকারে চলতে থাকে। এবার আমার আর কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিন।
আপনি কবে আপনার স্ত্রীর কাছে বলেছেন যে 💖 তোমাকে সুন্দর লাগছে?
মনে নেই। তবে এখন তাকে আর 🌹 সুন্দর লাগে না।
আগে লাগতো?
হ্যাঁ, 😍 অসম্ভব সুন্দর লাগতো।
এর কারণ 💎 সৌন্দর্য নয়। আপনি তখন তাকে ❤️🔥 ভালোবাসা নিয়ে দেখতেন। একবার নিজেকে 🪞 আইনায় ভালো করে দেখুন। আপনার নিজের মধ্যেও অনেক 🔄 পরিবর্তন এসেছে। আপনি যে সময়ের কথা বলছেন, যখন তাকে সুন্দর লাগতো, সেই সময় নিশ্চয় আপনি দেখতে এরকম ছিলেন না।
আমি একটু লজ্জা পেলাম। ভদ্রলোক সত্যি কথাই বলেছেন।
⏳ সময়ের সাথে সাথে সবকিছু বদলায়। আপনি সবকিছু আগের মত চাইবেন, অথচ নিজে আগের মত আচরণ করবেন না; এটা তো হবে না। আপনি যদি তার কাছ থেকে আগের মতন ভালোবাসা চান, তাহলে আপনাকেও তাকে আগের মতই ভালবাসতে হবে। আপনি নীরব থেকে যা যা এক্সপেক্ট করছেন, নিলুও নিশ্চয়ই সেইসব করছেন। কিন্তু পক্ষান্তরে তিনি কি সেটা পাচ্ছেন? হয়তো দিনের-পর-দিন পাননি। তাই হয়তো এমন হয়ে গেছেন; উপর্যপরি তার উপর যুক্ত হয়েছে তার PMS।
🕰️ ভদ্রলোক ঘড়ির দিকে তাকালেন। তারপর বললেন:
আজকে আর সময় দিতে পারছি না। আমার স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েরা এখনই কিরে আসবে। আমরা একসঙ্গে ডিনার করবো। আপনার যদি মনে হয় আরেকদিন কথা বলতে চান, তাহলে আমাকে টেক্সট করতে পারেন।
আমি উঠে দাঁড়াতে দাঁড়িয়ে বললাম,
যদি কোন প্রেসক্রিপশন দিতেন। ইয়ে মানে নীলুর জন্য আর কি।
ভদ্রলোক আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলেন। তারপর বললেন:
প্রেসক্রিপশন? ভাই আমি তো ডাক্তার নই।
😳 আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। কি বলবো বুঝতে পারলাম না।
নিচে নেমে এসে জাহিদকে ফোন দিলাম:
হারা, মজাদা, এ কার কাছে পাঠিয়েছিস তুই?
জাহিদ হাসতে হাসতে বলল,
কেন কি হয়েছে?
এই লোক তো ডাক্তার, সাইকিয়াট্রিস্ট কিছুই না।
আমি কখন বললাম ডাক্তার?
তাহলে তুই ওর কাছে আমাকে কেন পাঠালি?
কাজ হয়েছে কিনা বল?
জানিনা।
তোর ইমেইল চেক করে দেখ, সভদ্রলোকের একটা ইমেইল পাঠানোর কথা। পড়লেই সব বুঝতে পারবি।
📧 আমি ইমেইল চেক করলাম। তারপর সেখানে যে রকম ইনস্ট্রাকশন দেওয়া ছিল, সেই মতন সব কিছু নিয়ে ঠিকঠাক বাড়ি ফিরে দরজা নক করলাম। যথারীতি নিলু দরজা খুলে একপাশে দাঁড়িয়ে রইলো, অন্য দিকে তাকিয়ে। আমি আমার হাতের ফুলের তোড়াটা ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম,
নিলু, এটা তোমার জন্য।
🌼 নিলু হতভম্ব হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমি হাসতে হাসতে বললাম,
ভেতরে ঢুকতে দেবেনা?
নিলু এক পাশে সরে দাঁড়াল। আমি ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
অনেকদিন একসাথে বারান্দায় বসে চা খাই না। একটু চা বানাও তো।
🫖 নিলু অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইল। তারপর বলল,
ভাত খাবে না আগে? টেবিলে ভাত দিয়েছি।
🍚 আমি টেবিলের কাছে গিয়ে দেখলাম সব আমার পছন্দের পদ রান্না হয়েছে। প্রতিদিনই হয়; কখনও লক্ষ্য করে দেখিনি। অন্যমনস্ক ভাবে খেয়ে উঠে গেছি। আজ তাকিয়ে দেখলাম। আমি টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছি দেখে নিলু আমার গা ঘেঁষে দাঁড়াল। আমি পাশ ফিরে ওর মাথায় হাত রেখে বললাম,
চলো একসঙ্গে ভাত খাই।
✨ নীলুর চোখ চিকচিক করছে। আমি আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলাম। আমার পকেটের একটা ছোট্ট বক্সে একটা নাকফুল। ভদ্রলোক আমাকে বলেছিলেন ওর খুব প্রিয় কিছু নিয়ে যেতে। কিন্তু তার আর দরকার পড়ল না। কি অদ্ভুত! সবকিছু এত সহজ ছিলো, অথচ আমি আগে কেন বুঝতে পারলাম না।
🤔 এই ভদ্রলোকের কাছে মনে হয় আমাদের সবারই একবার করে যাওয়া উচিত। কি বলেন?
সমাপ্ত
©অনিমা হাসান|BongoCyber Blog Post
👇 Please Subscribe Our YouTube Channel 👇
0 Comments
Please Do Not Enter Any Spam Link In The Comment Box.